সেরা কৃষকের সম্মান পেলেন শস‍্যগোলা বর্ধমানের মন্তেশ্বরের তরুন কৃষক

21st February 2020 বর্ধমান
সেরা কৃষকের সম্মান পেলেন শস‍্যগোলা বর্ধমানের মন্তেশ্বরের তরুন কৃষক


আধুনিক পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে স্বল্প জলে তৈল বীজ চাষের দিশা দেখিয়ে সেরা কৃষক সন্মান পেলেন  আমিরুল হক সেখ। কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র আয়োজিত রাজ্য তৈলবীজ কিষাণ মেলায় পূর্ব বর্ধমানের  মন্তেশ্বরের এই কৃষককে জেলার শ্রেষ্ঠ কৃষক সম্মানে ভূষিত করা হয়।কৃষি দফতরের প্রত্যাশা আমিরুলের দেখানো পথে অন্য চাষীরাও তৈলবীজ উৎপাদনে  আগ্রহী হোক । তাহলেই  সম্বৃদ্ধ হবে রাজ্যের তৈলবীজ ভান্ডার ।  আমিরুল হক সেখের বাড়ি মন্তেশ্বরের ভাগড়া-মূলগ্রাম পঞ্চায়েতের তাজপুর গ্রামে ।   চাষের কাজে অভিনবত্ব দেখানোর ব্যাপারে বছর ২৯ বয়সী এই চাষী বরাবরই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ।আমিরুল বলেন ,প্রথাগত চাষের বাইরে বেরিয়ে গ্রামে একমাত্র তিনিই  ঝুকি নিয়ে নিজের জমিতে  তেলবীজ চাষের  সিদ্ধান্ত নেন । কিন্ত পর্যাপ্ত ভূগর্ভস্থ জল কিভাবে মিলবে সেই বিষয়টি তাঁকে খুব ভাবিয়ে তুলেছিল । কারণ তাঁর জমির কাছাকাছি কোন সাবমার্সিবল যেমন নেই তেমনই নেই কোন মিনি পাম্প। সেচের কাজে একমাত্র ভরসা ছিল কয়েকশো ফুট দূরে থাকা নালা ও খালের জল। ছোট পাম্প চালিয়ে পাইপের সাহায্যে সেখান থেকে জল নিয়েযেতে হয় নিজের জমিতে ।এতকিছু করেও পর্যাপ্ত জল সেভাবে  জমিতে যোগান দেওয়া দুঃসাধই ছিল ।  তবুও হাল ছাড়েন নি আমিরুল । তিনি তৈলবীজ চাষের জন্য আধুনিক চাষের পদ্ধতিকে অবলম্বন করেন । সেই পদ্ধতি মেনে স্বল্প জলে সরষে,মুসুর, তিল,সূর্য্যমুখী চাষ করে তিনি এলাকার চাষীদের  তাক লাগিয়ে দেন।শুধু তৈলবীজ  চাষই নয়। স্বল্প জলেই তরমুজ, শশা সহ  বিভিন্ন ফলচাষেও তিনি সফল হয়েছেন।ভূগর্ভস্থ জল বাঁচিয়ে এলাকার জলাভূমি থেকে মেলা সামান্য জলে সফল ভাবে চাষকরার দিশা চাষীদের দেখাতে পেরেছে আমিরুল । তারই কৃতিত্ব স্বরুপ দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নিমপিঠ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র তাঁকে সেরা কৃষক  সন্মানে ভূষিত করেছে । রাজ্য তৈলবীজ কিষাণ মেলায় বিশিষ্ঠ কৃষিবিদরা  আমিরুলের হাতে তুলে দিয়েছেন মানপত্র  ও ট্রফি। তরুণ এই চাষীর  সাফল্যে খুশি আপামোর  মন্তেশ্বরবাসী ।  ব্লক  কৃষি অধিকারিক  কণক দাস জানান,‘মন্তেশ্বর  সেমি ক্রিটিক্যাল ব্লক । এই ব্লকে ধান চাষটাই বেশি হয়। ভূগর্ভস্থ জলের অতিমাত্রায় ব্যবহার কমাতে কৃষকদের তৈলবীজ,ডালশস্য ও রবিশস্যে চাষে উৎসাহিত করা হয়েছিল। এই ব্যাপারে  আমিরুল  প্রকৃত অর্থেই দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে ।  আধুনিক স্প্রিংলার পদ্ধতি,পয়রা ক্রপিং,বায়ো মালচিংয়ের মাধ্যমে তৈলবীজ চাষকরে সে প্রচুর পরিমাণে তৈলবীজ উৎপাদন করে দেখিয়েছে । কণক দাস বলেন ,আমিরুল হক সেখ ২০১৮-১৯ বর্ষে  ব্লকের  কৃষক রত্ন পুরষ্কার পেয়েছিল। অন্য কৃষকরা আমিরুলের পথেই চাষের কাজে এগিয়ে গেলে রাজ্যের শস্যগোলার  কৃষিক্ষেত্র আরো সম্বৃদ্ধ হবে । 

ছবি : নতুন পদ্ধতিতে ফসল ফলানো জমিতে কৃতি কৃষক 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।